গল্পে গল্পে জেনে নিন শেয়ার বাজারের খুঁটিনাটি
আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন শেয়ার বাজার বা স্টক মার্কেট কী? সেই মোতাবেক আজকে হাজির হয়ে গেছি গল্পে গল্পে অর্থনীতির আরেকটি মজাদার পাঠ নিয়ে। তো চলুন, শুরু করা যাক।
অনেক দিন আগের কথা, এক স্বপ্নবাজ দরিদ্র তরুণ রুপাই আশা করল সে স্বাবলম্বী গৃহস্ত হবে। কিন্তু ভাবনা মোতাবেক কাজ করতে গিয়ে প্রথম বিপত্তি লাগলো টাকা সংগ্রহ নিয়ে। গ্রামের দুই একজন ধনী ব্যক্তির কাছে ঋণ চেয়ে কোন সুবিধা করতে পারল না। তাই রাগ করে গ্রামের চাচা-চাচী, ছাত্র-শিক্ষক সকলের থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা তুলে রুপাই ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নিল। সব মিলিয়ে তার উদ্যোগে মোট ৮০ জন ব্যাক্তি অংশগ্রহণ করলেন। প্রত্যেকে ১০০ টাকা করে তারা দিলেন মোট ৮,০০০ টাকা। আর রুপাই নিজ থেকে দিল ২,০০০ টাকা। এভাবে সর্বমোট ১০,০০০ টাকা দিয়ে রুপাই একটি মাছের প্রজেক্ট শুরু করল।
যেহেতু প্রজেক্টের অংশীদার ৮১ জন, প্রত্যেকেই লাভের অংশ পাবে। রুপাই পাবে ২০ শতাংশ, বাকি সকলে পাবে ১ শতাংশ করে। এই হল শেয়ারে ব্যাবসা। আপনারা সকলেই বোঝেন। কিন্তু স্টক মার্কেট বা শেরায় বাজারটা কি?
গ্রামের ছাত্র ছোটন তার বন্ধুদের সাথে শহরে ঘুরতে যাবে। কিন্তু হাতে কোন টাকা পয়সা নেই। উপায়ান্তর না দেখে সে ঠিক করল তার হাতের শেয়ারটি বেচে দিবে। পাশের বাড়ির জ্যাঠাতো বোন রুপার কাছে গিয়ে ছোটন বলল, “বুবু, আমার শেয়ার নিবি?” রুপা বলল ঠিক আছে, তবে এখন তো মাছের দাম পড়তি তাই তোকে ৯৫ টাকা দিব। ছোটন রাজি হয়ে গেল।
রুপার এখন শেয়ার দুইটি। সামনের বছরে সে প্রজেক্টের ২ শতাংশ লাভ পাবে। মাস খানেক পরে মাছের দাম বেড়ে গেল। এবার রুপা ঠিক করল তার শেয়ার গুলো বিক্রি করে দিবে। কিন্তু ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছে না।
অন্যদিকে গ্রামের এক চাচা শেয়ার কিনতে চাচ্ছেন তবে তাঁর পরিচিত কেউ বিক্রি করছে না। দুই জনই উপায় না পেয়ে রুপাইয়ের কাছে হাজির। রুপাই বলে এ কেমন জ্বালা? হতে চেয়েছিলাম কৃষক, এরা বানিয়ে দিচ্ছে দালাল (স্টক ব্রোকার)।
এই জ্বালা নিবারণ করতে রুপাই কাঁচারির সামনে পোস্টার টানিয়ে দিল-যারা কেনা বেচা করবেন এখানে করেন। সেই মোতাবেক পরের দিন সকাল থেকে লোকজন কাঁচারির সামনে এসে হাজির। কেউ আসে কিনতে, কেউ আসে বিক্রি করতে, নিজেদের মধ্যে দরদাম করে তারা মূল্য নির্ধারণ করে। কোন দিন দাম থাকে বাড়তি, কোন দিন পড়তি।
এদিকে রুপাইয়ের সাফল্য দেখে একে একে ধান ব্যবসায়ী, কাঠ ব্যবসায়ী, নির্মান কোম্পানি সকলে তাদের শেয়ার ছাড়া শুরু করল। যেহেতু রুপাইয়ের কাঁচারির সামনে ইতোমধ্যেই বেচাকেনা হয়, সেই সকল কোম্পানির শেয়ারের মালিকরাও কাঁচারির সামনেই ভীড় জমাতে শুরু করেন। এভাবে বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হতে থাকে এবং শেয়ার বাজারের আকৃতি বড় হতে থাকে। এই হল শেয়ার বাজার বা স্টক এক্সচেঞ্জ।
লেখাটি পড়ে ভালো লেগে থাকলে একটি বার ধন্যবাদ দিতে বা জাজাকাল্লাহ লিখতে ভুলবেন না।
Pingback: ডলারের দাম বৃদ্ধি ও বাংলাদেশের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট সংকট - মোহাইমিন পাটোয়ারী
যাযাকাল্লাহ
জাজাকাল্লাহু খায়রান প্রিয় মোহাইমিন ভাই💚
جَزَاكَ خَيْرًا
Zazak Allah!