আগের দিনে গ্যাসের চুলা ছিল না, লাকড়ির চুলাতে রান্না করতে পাতা ও কাঠ কুড়ানো, এগুলো শুকানো, ছাই সাফ করা, চুলা প্রস্তুত ও মেরামত করা সহ অনেক কাজ ছিল।
এখন গ্যাসের চুলা এসে সব কাজ শেষ হয়ে গেছে। কেবল একটু টাকা খরচ করতে হয়।
আগে হারিকেন ও বাতি জ্বালানো, হাত পাখা চালানো ও ফ্রিজ ব্যবহার না করে খাবার সংরক্ষণ করার কাজ ছিল। এখন সুইচ টিপলেই কাজ শেষ। খাওয়া গরম করতেও মেশিন চলে এসেছে, কেবল সুইচ টিপলেই হয়। কষ্ট করে পানি আনতে লাগে না, কল ঘুরালেই পানি হাজির। তবে বিদ্যুৎ বিল, ফ্রিজ কেনা, ওভেন, মোটর ও ফিল্টার কেনার খরচ বেড়েছে।
আগের দিনে মহিলারা তাঁত ও সেলাই কাজ করত, ফসল ঘরে তুলতো, হাঁস মুরগি, গরু পালত, ঢেঁকিতে গুড়ি তৈরি করতো, মশলা পিশতো, গ্রামের বড় বাড়ি দেখাশোনা করত।
আর এখন, এগুলো কিছুই করতে হয় না। সেজন্য খরচ বেড়ে গেছে। জগতে কিছুই ফ্রি না।
আগের দিনে এক মহিলা সত আটটা সন্তান পালত। এখন হয় দুই তিনটা। সব মিলিয়ে নারীদের কাজ অনেকটা কমে এসেছে। কিন্তু যেহেতু খরচ বেড়েছে মহিলাদের উচিত আয় রোজকারে মনোযোগী হয়ে স্বামীর কাঁধের চাপ কমানো।
সবাই অফিসে চাকরি করবে ব্যাপারটা তা নয়। যে যেই কাজ ভালো পারে সেই প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে উচিৎ। নিজের শ্রম ও মেধা খাটিয়ে সংসারে সহায়তা করা উচিৎ। হয়তো কেউ রান্না ভালো পারে, কেউ ডিজিটাল মার্কেটিং ভালো পারে, কেউ হয়তো হিসাব বিজ্ঞানে সেরা, কেউ হয়তো সেলাই ভালো পারে, কেউ শিক্ষিকা হিসেবে ভালো, কেউ হয়তো কোরান শিক্ষা দিবে, কেউ লেখিকা হবে। এভাবে যার যেই কাজে দক্ষতা তা দিয়ে সংসারে অংশগ্রহণ করা উচিত। কারণ আগের যুগের মত এখন সব কিছু করে খেতে হয় না। সব রেডিমেড হয়ে গেছে। তাই আমাদের কাজের ধরণ ও খরচ বদলে গেছে।
সেজন্য নিজের যোগ্যতা ও শ্রম দিয়ে সংসারের খরচ কমানো কিংবা আয় বাড়ানোতে অংশগ্রহণ করাটা সুন্দর চিন্তা বলে মনে করি। আমি বসে থাকব, আর বুয়া কাজ করে দিবে শিক্ষক এসে পড়িয়ে দিবে; আর টাকার মেশিনের মতো স্বামী কেবল দিয়ে যাবে এই ধরণের চিন্তা একেবারে অলসের যুক্তি।
বি দ্র – আলস্য স্বাস্থ্যহানী ও হতাশার কারণ।
মোহাইমিন পাটোয়ারী