বিশুদ্ধ পুঁজিবাদে করের হার ০%
এই অর্থ-ব্যবস্থায় প্রত্যেক ব্যক্তি জমি, সম্পদ, জাহাজ, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ট্রেন, ফ্যাক্টরি সহ সব ধরণের সম্পদের মালিক হতে পারবেন। সরকারি সম্পদ বলে (খাস জমি ব্যতীত) কিছু থাকবে না। সব অর্থনৈতিক কর্মকান্ড হবে ব্যক্তি উদ্যোগে।
এর পাশাপাশি প্রত্যেকে নিজ নিজ আয় ১০০% ঘরে তুলতে পারবেন। কেউ ধনী হতে থাকলে সরকার তার উপর কর আরোপ করে সমতা রক্ষার চেষ্টা করবে না, আবার কেউ দরিদ্র অধঃপতিত হলে সরকার এসে তাকে রাক্ষাও করবে না। দান খয়রাতও হবে ব্যক্তিগত।
নাগরিকরা নিজ নিজ যোগ্যতা অনুযায়ী আয় রোজকার করবে এবং কর্মসংস্থান করবে। এই ব্যবস্থায় শ্রমিক ইউনিয়ন, ভ্যাট, গুদামজাত করণ, সরকারী পণ্য সরবরাহ সব ধরণের বাজার বিরোধী কার্যকলাপ অনুপস্থিত থাকবে।
ক্রেতা ও বিক্রেতার স্বাধীন মিথস্ক্রিয়ায় যেই মূল্য নির্ধারিত হবে তাই হবে বাজার মূল্য। সরকার কেবল আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখবে। তাই একটি পণ্য কি পরিমাণে উৎপন্ন হবে, কোন এলাকায় উৎপন্ন হবে এবং কোথায় সরবরাহ করা তা হবে সরকারের হস্তক্ষেপের বাহিরে (সমাজতন্ত্রের বিপরীত)।
যেহেতু সরকার কারো থেকে কর বা শুল্ক আদায় করবে না, সে সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠান যেমন স্কুল, কলেজ বা হাসপাতালও চালাবে না। সে কেবল বাজার বিরোধী কার্যকলাপ বন্ধে কাজ করবে এবং আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখবে।
এর বিপরীত সিস্টেম হচ্ছে সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্রে করের হার ১০০%। এই বিষয়টি কীভাবে কাজ করে তা আপনাদের অনেকের বুঝতে সমস্যা হতে পারে।
মনে করেন আপনি এক মাস কাজ করলেন। আপনি এর বিনিময়ে ২০ হাজার টাকা বেতন পাবেন। এমন সময় সরকার বলল, “আমাকে বিশ হাজার টাকা দিন। এর মালিক সরকার।”
আপনি টাকা দিয়ে বাড়ি ফিরে আসলেন।
এদিকে আপনার স্ত্রী খেতের থেকে সবজি তুলে আনলো। এমন সময় সরকার এসে বলল, ” কৃষি কর ১০০ শতাংশ। সব সবজি আমাকে দিয়ে দাও।”
আপনার স্ত্রী সেই মোতাবেক সবকিছু দিয়ে দিল। কারণ না দিলে জেল জরিমানা হবে। এইটাই আইন।
তাহলে আপনি খাবেন কী?
খেয়াল করে দেখুন, সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সবকিছুর মালিক সরকার। সে যেমন সব সম্পদ কেড়ে নেয়, ঠিক তেমনি সবাইকে খাওয়ানো, পরানো এবং চিকিৎসা করানোর দায়িত্ব নেয়। তাই উপরের উদাহরণে আপনি যখন আপনার ছেলে-মেয়েকে স্কুলে, কলেজে বা মাদ্রাসায় পাঠাবেন আপনাকে কোন বেতন দিতে হবে না; খাতা কলম কিনে দিতে হবে না; আসা যাওয়ার খরচ দিতে হবে না। স্কুল ফ্রি, সেখান থেকে খাতা, কলম ও বই দিবে সবাইকে ফ্রিতে এবং যাওয়া আসার খরচও ফ্রি।
কেবল তাই না, আপনি যখন হাসপাতালে যাবেন ডাক্তার দেখাতে তখনও আপনার কোন খরচ নেই। যখন আপনি শহরে বা গ্রামে যাবেন কোন কাজে তখনও আপনার কোন খরচ নেই। সব যানবাহন ফ্রি। এমনকি আপনার থাকা, খাওয়া ফ্রি। কাপড়, জুতা, সাবান সব ফ্রি। আপনি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে সব হাতে পাবেন এবং তার বিনিময়ে কাজ কর্ম ও পড়াশোনা করে যাবেন। এই হচ্ছে সমাজতান্ত্রিক অর্থ-ব্যবস্থা।