ব্যবসা প্রশাসন শিক্ষার সবচেয়ে বড় ব্যার্থতা হচ্ছে সে ছাত্র ছাত্রীদের ব্যবসা শেখাতে পারে নাই। এজন্য শিক্ষার্থীরা উদ্যোগী হবার স্বপ্ন না দেখে কেবল বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরি খোঁজার চেষ্টা করে। আমরা দেখি না প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রীরা এই নিয়ে আলোচনা করছে যে কে কীভাবে একটি সুন্দর ব্যবসা দাঁড় করাতে পেরে সমাজের কোন কোন সমস্যার সমাধান করতে পেরেছে। কিংবা কার প্রতিষ্ঠান কতটা ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পেরেছে।
বরং ছাত্র ছাত্রীরা গর্ব করে বলে আমি এই কোম্পানিতে কাজ করি, এতো টাকা বেতন পাই ইত্যাদি ইত্যাদি। যে যতো বড় কোম্পানিতে কাজ করে ব্যাচের মধ্যে সে তত বড় তারকা। কি অদ্ভুত চিন্তা! তার চেয়েও ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে জুনিয়ররা তাদের নিয়েই আলোচনা করে, তাদের মত হতে চায়, তাদের লাইফস্টাইল অনুসরণ করার চেষ্টা করে ইত্যাদি। সবাই মনে করে বড় বড় কোম্পানিতে কাজ করা কর্মচারীরাই সবচেয়ে সুখী, সফল ও ধনী।
কিন্তু বাস্তবে একজন জমির ব্যাবসায়ী কিংবা রাস্তার ঠিকাদারও বহুজাতিক কোম্পানিতে কাজ করা ব্যক্তিদের চেয়ে অনেক বেশি আয় করে। অছচ এই তথাকথিত বিবিএ গ্রাজুয়েটরা জানেই না বাংলাদেশে কীভাবে ব্যবসা করতে হয়। উত্তর আমেরিকার বই পড়ে তারা যা শিখে তা এই দেশে কার্যকর না। এসব অপ্রয়োজনীয় পড়াশোনায় সময় ব্যয় না করে কেউ যদি কেবলমাত্র ভূমি অফিসে ঘুরে কীভাবে কাজ হয় তা দেখে, ব্যবসা লাইসেন্স করার নিয়ম শেখে, ট্যাক্স এবং টেন্ডার সাবমিশনের কাজ বুঝে, সেও বাংলাদেশে ব্যবসা করে জীবীকা অর্জনের পর্যাপ্ত জ্ঞান নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবে। অছচ এগুলোর কিছুই শেখানো হয় না ব্যবসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। সেজন্য বেকারত্বের ভয় শিক্ষার্থীদের তাড়া করে বেড়ায় এবং সিনিয়রের পিছন ঘুরে কোন মতে একটি চাকরি পেয়ে জীবিকা অর্জনের ধান্দা খুঁজে।
মোহাইমিন পাটোয়ারী
১০ জুলাই, ২০২৩