বিশ্ব ব্যাংকের বিরুদ্ধে সমালোচনা

বিশ্বব্যাংকের ব্যাপারে সমালোচনা আছে যে তারা এমন সব যোগাযোগ প্রজেক্টে ব্যয় করে যেগুলো পশ্চিমা দেশের সাথে সারা বিশ্বকে সংযুক্ত করায়। বাংলাদেশ (বা অন্য কোন উন্নয়নশীল দেশ) সারা বিশ্বের যোগাযোগের কেন্দ্র হবে এমন কাজ তারা করে না। বরং আমেরিকা থেকে সারা বিশ্বের কেন্দ্র গুলো সংযুক্ত থাকবে এগুলো তারা করে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ নেপালের সাথে সংযুক্ত হবে, থিম্পুর সাথে রেঙ্গুনের যাতায়াত সহজ হবে, চীনের সাথে মধ্য এশিয়ার রেল যোগাযোগ উন্নত হবে এগুলো বিশ্ব ব্যাংক ফান্ডিং করে না। কিন্তু বাংলাদেশ বিমানবন্দর করবে, জাহাজ বন্দর করবে, ঢাকার সাথে চট্টগ্রাম বা অন্যান্য বন্দরের যোগাযোগ উন্নত হবে যেগুলো দিয়ে দেশের থেকে বিদেশে রপ্তানি হবে, সেই সকল কাজে বিশ্ব ব্যাংক বেশি বেশি আগ্রহ দেখায়। এর ফলে দেখা যায় পশ্চিমের দেশ গুলোর সাথে সারা বিশ্বের যোগাযোগ উন্নত হচ্চে। এভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে সহজে বাণিজ্য করছে এবং তার পাশাপাশি মেধা সংগ্রহ করছে। আর পুরা কাজটি করা হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশের টাকায়। কারণ, বিশ্বব্যাংক কেবল ঋণ দেয় আর এই ঋণগুলো সুদে আসলে দেশের জনগণকে পরিশোধ করতে হয়।

যোগাযোগ প্রকল্পের পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি, পরিবেশ উন্নয়ন শিক্ষা খাতে বিভিন্ন যেই সকল বিনিয়োগ করা হয় তা অনেক ক্ষেত্রেই তাদের বিদেশে রপ্তানি কেন্দ্রিক অঞ্চলের উন্নয়ন বা নিজস্ব আদর্শ বাস্তবায়নকে ঘিরে করা হয় বলে অভিযোগ আছে। এই টাকাগুলো দিয়ে যদি একটি জাতি তার নিজস্ব আদর্শ বাস্তবায়ন, দেশীয় শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া এবং দেশকে বিশ্বের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার চিন্তায় বিনিয়োগ করতো (যেমনটা বর্তমানে দুবাই ও কাতার করছে), তাহলে অধিক সুফল পাওয়া যেতো।

কিন্তু তাহলে সরকার কেন এই ব্যবহুল ঋণগুলো নেয়? নেয় কারণ এর দ্বারা দেশের কিছুটা উন্নতি হয়। দ্বিতীয়ত, বিশ্বব্যাংকের ঋণে সুদের হার তুলনামূলক কম। সবশেষে সরকারকে ঋণ গেলানোর জন্য বিশ্বব্যাংকের টিম কাজ করে। এভাবে দেশের জনগন নিজ টাকায় নিজ দেশের জন্য সবচেয়ে কল্যাণকর কাজটি না করে আমেরিকা ও তার দোসরদের জন্য সবচেয়ে কল্যাণকর কাজগুলো করে।

শেয়ার করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *