২০১৮ সালে আমি কোটা সংস্কার আন্দোলনের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলাম।
যারা আমার সাথে ছিল সেই সময় তারা জানে কত পরিশ্রম, কত ঘাম এবং পুলিশি হয়রানির শিকার হয়ে এই আন্দোলন সফল হয়েছে।
সেই সময় আমি যেই কাজটি খুব দক্ষতার সাথে করতে পারতাম তা হচ্ছে স্ট্রিট প্রোটেস্ট। কোন জায়গায় কীভাবে রাস্তা আটকাতে হবে, পুলিশের গাড়ি কোন দিক দিয়ে আসতে পারে, কীভাবে রাস্তা আটকালে টিয়ার সেল গায়ে পড়বে না যেদিন বিদেশে যাচ্ছিলাম তার আগের দিন নিরাপদ সড়ক আন্দোলন কঠোরভাবে দমন করা হয়েছিল। সেই ইতিহাস আপনারা অনেকেই জানেন। আমি মনের দুঃখে আর বাংলাদেশের কোন খবর দেখতাম না বিদেশে যাবার পর একেবারে তাদের মাঝেই মিশে যাই, দেশকে ভুলে গিয়ে শান্তি খুঁজি।
প্রায় বছর খানেক বাংলাদেশের সাথে বাসার মানুষ ব্যতীত দেশের সাথে আর কারো সাথে কোন যোগাযোগ ছিল না। খবরও দেখতাম না কোন। সুখে শান্তিতে ছিলম বিদেশের মাটিতে। ভিনদেশীয়দের সাথে উঠা বসা, খাওয়া দাওয়া। বাঙ্গালী কমিউনিটির থেকে আলাদা ছিলাম।
হোস্টেলে আমি বাদে একজন বাঙ্গালীও ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার বর্ষে কেবলমাত্র একজন বাঙ্গালী ছাত্র ছিল, তবে কোর্স আলাদা হওয়ায় খুব একটা দেখা হতো না। তবে ভীনদেশীয় বন্ধুদের সাথে ভালো সম্পর্ক ছিল মাঝে মাঝে তাদের সাথে ঘুরতে যেতাম পাহাড়ে কিংবা চোখ ধাঁধানো সুন্দর নরওয়েজিয়ান ফিয়র্ডে। সেমিস্টার ব্রেকে ইউরোপের অন্যান্য দেশেও ঘুরেছি। চিন্তা মুক্ত জীবন, সুন্দর পরিবেশ, সতেজ খাওয়া, আর পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে সুন্দর প্রকৃতির সাথে সময় ব্যয়।
অসাধারণ একটা জীবন ছিল তখন। তবে আল্লাহ চেয়েছেন এই দেশের জন্য এবং দ্বীনের জন্য কাজ করবো। তাই এখন সেই চেষ্টাই করছি। সারাক্ষণ স্বপ্ন দেখি কীভাবে দেশটা আরও সুন্দর হবে। সমাজের মানুষগুলো একে অন্যের পিছে না লেগে একত্রে মিলেমিশে পারষ্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সাথে ভালো কিছু করবে। জানিনা সামনে কি আছে। সেই পরিকল্পনা করি না। করেও লাভ নেই। আল্লাহর পরিকল্পনাই বাস্তবায়িত হবে। কেবল চেষ্টা করি যতদিন বেঁচে আছি জীবনের প্রতিটি মিনিট যেন ভালো কাজে ব্যস্ত থাকি।