কেন আমরা সাংস্কৃতিক কারণে চীনের তুলনায় অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকবো?

আমি যেই প্রতিষ্ঠান থেকে চীনা ভাষা শিখেছি সেই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষিকারা চীন থেকে আসতো। তাদের সিলেবাস, এডমিন সব ছিল চীনা। মাঝে মাঝে মনে হতো যেন চীনের ক্লাসরুমে বসে পড়াশোনা করছি।

সেই প্রতিষ্ঠানের একটি ঘটনা শুনুন। একদিন সেখানে শিক্ষিকা বোর্ডে লিখছিলেন। লিখতে লিখতে এক সময় ওনার হাত থেকে রক্ত পড়ে কব্জি পর্যন্ত নেমে আসে যায়। আমি প্রথম বিষয়টা খেয়াল করি।

ঘটনা হচ্ছে আগের দিন সবজি কাটতে গিয়ে উনি হাত কেটে ফেলে। ব্যান্ডেজ বাঁধা হাত দিয়ে বোর্ডে লিখতে গিয়ে কাটা জায়গায় টান লেগে হাত থেকে রক্ত পড়া শুরু করে এবং কবজি পর্যন্ত ভেসে যায়।

আমি দেখার পরে উনি দ্রুত শিক্ষক শিক্ষিকাদের রুমে যায় এবং আমরা কয়েক জন সাথে যাই। উনি বার বার চীনা ভাষাতে বলতে থাকেন ক্লাসে যাও, পড়তে থাকো। হাসি দিয়ে বুঝান এইটা কিছু না। কিন্তু ততক্ষণে রক্ত কব্জি বেয়ে আরো নেমে আসছে।

কিন্তু তাই বলে ক্লাস টাইমে কোন অবহেলা করা যাবে না। ওনার হতে এক শিক্ষিকা ব্যান্ডেজ ঠিক করা শুরু করলেন এবং আরেক জন শিক্ষিকা আমাদের নিয়ে ক্লাসে এসে ঠিক যেই জায়গাতে তিনি থেমেছিলেন সেই জায়গা থেকেই পড়ানো শুরু করলেন। দশ মিনিটের মধ্যে ব্যান্ডেজ ঠিক করে তিনি ফিরে এসে ঐ শিক্ষিকা যেখানে পড়াচ্ছিলেন, সেখান থেকে শুরু করে বাম হাতে পুরা ক্লাস শেষ করেন। এক মিনিটের জন্য মনে হোল না আজকে ক্লাসে খারাপ পড়া হচ্ছে।

পরের দিন তিনি আবার আগের মত পড়ালেন। কোন অভিযোগ নেই কোন হা হুতাশ নেই।

একটা বার ভাবুন তো, উন্নতি তারা করবে নাকি আমরা?

মোহাইমিন পাটোয়ারী

শেয়ার করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *