চার শতাব্দী ধরে গড়ে উঠা মুদ্রা ও অর্থ ব্যবস্থার যেই জাল আমাদের বন্দী করে ফেলেছে তার থেকে জাতিকে এক রাতে আমি উদ্ধার করে ফেলতে পারবো না।
যারা আমার বিরোধিতা করে তারা কোন যুক্তি খন্ডন না করতে পেরে কেবল বলে “আরও পড়ুন, আরও জানুন ইত্যাদি” কিন্তু বাস্তবে
১। আধুনিক মুদ্রা ব্যবস্থা এমন এক জোঁকের মতন যা আমাদের সব সম্পদ ধীরে ধীরে চুষে খাচ্ছে। এই ব্যাপারে একটু পড়ুন, একটু জানুন। না বুঝলে আমার কাছে এসে শিখে নিন। আমি খুশি মনে শেখাতে রাজি আছি।
২। ডলার ভিত্তিক যেই শক্তি তারা চায় না পৃথিবীর কোন দেশের অর্থ ও মুদ্রা ব্যবস্থা ন্যায্য হোক। তাই যেই দেশে ও ব্যক্তি সেই জাতীয় পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করে তাদের অবস্থা কি হয় ইতিহাসের পাতা ঘুরলেই দেখবেন। আমি এক কথায় গিলোটিনে মাথা রেখে আছি।
৩। সুদ যদি উচ্ছেদ না করা হয়, কেবল মুদ্রা বদল করে লাভ হবে না কোন।
৪। সুদ সকল মুদ্রা কেন্দ্রীভূত করে ফেলে এবং তার পরবর্তীতে সুদের প্রভাবে অর্থনৈতিক বৈষম্য নিশ্চিত রূপে বৃদ্ধি করে। ব্যবসা দ্বারা তা সম্ভব না কারণ ব্যবসা মুদ্রা পুঞ্জিভূত করতে পারে না। এখানেই সুদ ও ব্যবসার মূল পার্থক্য। বিষয়টি বইতে বিস্তারিত উল্লেখ আছে। বলা যায় এই বই লিখতে গিয়ে আবিষ্কার করে ফেলি যে ইসলামি ব্যাংক নামে যা চলছে তা অর্থনৈতিকভাবে সুদ। এখানে ১০০% সুদের লেনদেন হচ্ছে ব্যবসা বাহানার মাধ্যমে। তারপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকের শরিয়া ব্যক্তিত্বদের সাথে কথা বলি এবং বুঝতে পারি আমরা এক বিশাল প্রতারণার শিকার। এই পর্যন্ত যত জনের আমাকে দেখা করতে বলা হয়েছে তাদের প্রায় সবার সাথে সাক্ষাত ও কথা হয়েছে। তারপরেও আমি এবার তাদের সাথে মুখোমুখি বসতে চেয়েছি যখন আলি হাসান উসামা ভাই এই প্রস্তাব করেন। কিন্তু কোন সাড়া পেলাম না।
৫। বিজনেস ফাইন্যান্সিং বিনিয়োগের মাধ্যমে সুন্দর করা সম্ভব হয়। কিন্তু বর্তমানে বিনিয়োগের নামে অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে যারা নিজেদের হালাল সার্টিফিকেট নিয়ে ঘুরে কিন্তু তারা ১০০% সুদের মডেল। উপরে কেবল ব্যবসার আবরণে ঘুরে। হালাল সার্টিফিকেটও আছে তাদের কারো কারো। তাই ব্যাংক থেকে টাকা তুলে এই জায়গা গুলোতে বিনিয়োগ করার ব্যাপারে সতর্ক হন। এই দিক থেকে বেশ কিছু ভালো প্রতিষ্ঠানও আছে যারা সত্যিকারের বিনিয়োগ করছে। তাদের সাথে থাকতে পারেন।
৬। ফ্র্যাকশনাল রিজার্ভ ব্যাংকিং না বুঝলে এই দুনিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক বস্তুটি আপনি বুঝলেন না। কিন্তু অবাক করা বিষয় হচ্ছে এই ব্যাপারে অর্থনীতির ছাত্রদের শেখানো হয় না। শেখানো হয় না কেন আমেরিকা যাকে ইচ্ছা তাকে স্যাংশন দিতে পারে কিন্তু অন্যান্য দেশ পারে না।
৭। নারীবাদ, সমকামিতা, ট্রান্সজেন্ডার, ব্যক্তি স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, ব্যক্তি স্বাধীনতা সহ যত মতবাদ দেখতে পান তার মূল শক্তি ও সাপোর্টার হচ্ছে অর্থনীতির মানি মাস্টার্সরা। এই দুই বিষয় একে অপরের সাথে ইঞ্জিন ও চাকার মতন সম্পর্কিত। আজকে আমরা এই সকল তন্ত্র মন্ত্র গেগ্রাসে গিলছি তার কারণ পশ্চিমারা অর্থের প্রাণকেন্দ্র। যদি তাদের এই শক্তি ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং তারা ভঙ্গুর ও গরিব রাষ্ট্র হয়ে যায় কেউ এই সকল অপ্রয়োজনীয় মতবাদ গিলবে না।
আমার কথা সত্য হিসেবে মানতে আপনি বাধ্য না। তবে যদি সত্য বলে মনে হয়, প্রচেষ্টা করেন আরও বেশী জানতে এবং নিজের থেকে কিছু করতে। আমি একা সব সমস্যার সমাধান না। আমরা সবাই মিলে সমাধান। সাহস রাখবেন, ধৈর্যশীল হবেন এবং পরিশ্রমী হবেন। আর অবশ্যই কোরানের অর্থ বুঝে বুঝে প্রতিদিন পড়ার চেষ্টা করবেন এবং চিন্তা করবেন। তাহলেই আপনি প্রতিকূল পরিবেশের বিরুদ্ধে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারবেন। আমি পাপী, অনেক বেশী পাপী। হতেও পারে আল্লাহ আপনাকে আরও বড় কাজের জন্য কবুল করবেন। তাই নিজেকে ছোট না ভেবে ভালোর দিকে এক পা হলেও এগিয়ে আসুন।