অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী একজন পাঠক এবং আমি মিলে নতুন একটি চিন্তা সামনে আনতে চাচ্ছি। এর নাম দিলাম কৃষি মুদ্রা বা গ্রিন কারেন্সি।
বষয়টি কীভাবে কাজ করে ব্যাখ্যা করা যাক।
ধরুন আপনি কিছু টাকা ব্যাংকে রাখলেন। এক বছর পরে তা সুদে আসলে বেড়ে উঠবে। এই ঘটনার সাথে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত।
কিন্তু তার চেয়ে বেশি পরিচিত এই ঘটনার সাথে যে গাছের থেকে গাছ হয়। ধরুন আপনি পাঁচটি শুকনা মরিচ হাতে পেলেন। এগুলো আপনার মুদ্রা। এই মরিচগুলো আপনি মাটিতে ফেললেন। দুই মাসের মধ্যে আপনি কয়েকশ মরিচ ফেরত পেলেন। মরিচ যদি মুদ্রা হয় সুদে আসলে আপনার রিটার্ন কত?
এই হিসেবে একটু গিট আছে। যারা ফাইন্যান্সের ব্যক্তি তারা বলবে সবজি উৎপাদন করতে তো জমি লাগে। জি, আপনার কথা ঠিক। কিন্তু ব্যাংকের অফিসের জন্যও দামী বাড়ি ও জমি লাগে।
যারা কৃষি কাজের সাথে জড়িত, তারা সাথে সাথে বলবেন – একটি বীজ থেকে সবজি পেতে কি পরিমাণ শ্রম দিতে হয় তা কি আপনি জানেন?
জি, অবশ্যই জানি। একটি ব্যাংকের ক্যাশিয়ার, দারোগা থেকে শুরু করে অফিসার, সিইও সবাই শ্রম দিয়েই ব্যাংককে বড় করে। সেই হিসেবে কৃষিতে শ্রম দিতেই পারেন আপনি কিছু রিটার্ন আশা করলে।
কিন্তু সমস্যা শ্রমে না, সমস্যা হচ্ছে আয়ে। সার, পানির খরচ দিয়ে কৃষি কাজে খুব সামান্য আয় থাকে। কিন্তু গুরুত্ব বিচারে এর প্রভাব অপরিসীম। আপনি এক লক্ষ টাকাকে দুই লক্ষ টাকা করতে করতে যেই সময় লাগবে সেই সময়ে মুদ্রাস্ফীতিতে আপনার আয় বলতে আর কিছু থাকবে না। পাপ পূণ্যের হিসেব বাদই দিলাম।
সেই তুলনায় এক লক্ষ টাকার বীজ, পানি ও সার থেকে যদি অন্য কারো অনাবাদী জমিতেও চাষ বাষ করান। আপনি কোন বাড়তি রিটার্ন না নিলেও একাধিক ব্যক্তির কর্ম সংস্থান হয়, আপনি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার কাজে ভূমিকা রাখেন, একটা ভালো কাজের আনন্দ পান এবং আপনার সাথে দশজন মানুষের সুসম্পর্ক হয়। তার সাথে যেই বাড়তি রিটার্ন আসবে তা পুরোটাই বোনাস। একবার ভেবে দেখেন তো, বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে এটি কি উত্তম না?
Pingback: শেয়ার বাজার বা স্টক মার্কেট কী? - মোহাইমিন পাটোয়ারী