মসজিদ নাকি মিসকিন? দান পাওয়ার ক্ষেত্রে কে অগ্রাধিকারী?

আমাদের নিকট সীমিত সম্পদ থাকার কারণে প্রায়ই যে সমস্যার মুখোমুখি হই তা হচ্ছে যে কাকে দান করব? এই ক্ষেত্রে আমাদের দেশে যেহেতু মসজিদ এবং মিসকিন উভয়ই বেশি তাদের মধ্যে বাছতে হলে একজন মুসলিমের কাকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত?

প্রথমে দেখা যাক মিসকিনদের দানের ব্যাপারে কোরান কি বলে

১. আমি কি তাকে ভালো-মন্দের পরিষ্কার দুটো পথ দেখিয়ে দেইনি? এরপরও সে কঠিন পথে চলার চেষ্টা করেনি। জানো সে কঠিন পথ কী? তা হচ্ছে, দাসকে মুক্তি দেওয়া। অথবা, কঠিন অভাবের দিনে খাবার দান করা, নিকটাত্মীয় এতিমদের এবং দারিদ্রের আঘাতে নিষ্পেষিত অসহায় মানুষকে।

-সূরা বালাদ

২. তখন সে আফসোস করে, “আমার প্রতিপালক আমাকে অপমানিত করেছেন।” —সেটা কখনই নয়। বরং তোমরাই তো এতিমদের সম্মান করো না। “অভাবীদের” খাবার তাদেরকে দিতে উৎসাহ পর্যন্ত দাও না। উত্তরাধিকারীদের প্রাপ্য সম্পদ গোগ্রাসে আত্মসাৎ করো। সম্পদের প্রতি তোমাদের মাত্রাতিরিক্ত মোহ।

—আল-ফাজর ১৭-১৯

৩. যে ব্যক্তি বিচারদিনকে অস্বীকার করে তাকে খেয়াল করেছ? এরা এতিমদেরকে তাড়িয়ে দেয়। অভাবীদের খাবার তাদেরকে দিতে উৎসাহও দেয় না। তাই, নামাজিরা শেষ হয়ে যাক। যারা নামাজের ব্যাপারে খামখেয়ালী। যারা লোক দেখিয়ে করে। ছোটখাটো উপকার করতেও তারা মানা করে। – – সূরা আল-মাউন

৪. পূর্ব-পশ্চিমে মুখ ফেরালেই সেটা ধার্মিকের মতো কাজ হয়ে গেল না। বরং সত্যিকারের ধার্মিকতা হচ্ছে: যারা আল্লাহর تعالى প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং বিচারের দিন, ফেরেশতাগন, সব কিতাব এবং নবীদের প্রতি বিশ্বাস রাখে। যারা নিজেদের সম্পদকে ভালোবাসার পরেও তা দান করে নিকটজনকে, এতিম, মিসকিনকে, বিপদে পড়া ভ্রমণকারীদেরকে, যারা সাহায্য চায় তাদেরকে এবং দাস-যুদ্ধবন্দিদের মুক্ত করার জন্য দান করে। যারা সালাত প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত আদায় করে, কথা দিয়ে কথা রাখে; দুর্দশা-দারিদ্রতা, অসুস্থতা-কষ্ট এবং ভীষণ কঠিন সময়েও ধৈর্যধারণকারী। —এরাই নিজেদেরকে প্রমাণ করেছে, আর এরাই সত্যিকারের তাকওয়া অর্জন করতে পেরেছে। [আল-বাক্বারাহ ১৭৭]

৫. অঙ্গীকার নিয়েছিলাম: “আল্লাহ ছাড়া আর কোনো কিছুরই ইবাদত করবে না; বাবা-মার জন্য সবকিছু সবচেয়ে ভালোভাবে করবে; এবং নিকটাত্মীয়, অসহায়-এতিম আর গরিব-সামর্থ্যহীনদের সাথেও; মানুষের সাথে খুব সুন্দর ভাবে কথা বলবে; সালাত প্রতিষ্ঠা করবে এবং যাকাত দিবে।” এরপরও তোমাদের কয়েকজন ছাড়া বাকি সবাই মুখ ফিরিয়ে নিলে। তোমরা কথা দিয়ে কথা রাখোনি। [আল-বাক্বারাহ ৮৩]

৬. তারা আল্লাহর প্রেমে অভাবগ্রস্ত, এতীম ও বন্দীকে আহার্য দান করে। তারা বলেঃ কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে আমরা তোমাদেরকে আহার্য দান করি এবং তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান ও কৃতজ্ঞতা কামনা করি না।। (সুরা দাহর : আয়াত ৮)

এবারে চলুন আমরা দেখি মসজিদে দান করার ব্যাপারে কোরান কি বলে?

 

মসজিদে দান করার ব্যাপারে কোরানে কোন আয়াত নেই

**এবারে নজর দেওয়া যাক হাদিসের দিকে। বুখারী শরীফে মসজিদে দানের ব্যাপারে কোন হাদীস নেই। তবে এই ব্যাপারে মুসলিম শরীফে হাদীস আছে যা নিম্নরূপ-

‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য মসজিদ নির্মাণ করল, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’ (মুসলিম : ১২১৮)

তবে কদমে কদমে মসজিদ নির্মাণে কিংবা মসজিদের “শান শওকত” বৃদ্ধির ব্যাপারে উৎসাহ দিয়েছেন এমন হাদিস কখনো আমি পাইনি।

**মিসকিনদের দানের ব্যাপারে হাদিসে এত বেশি উল্লেখ আছে যে এই স্বল্প পরিসরে তা আলোচনা করা সম্ভব না।

শেয়ার করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *