সোনা, রুপা দিয়ে কি ডিজিটাল যুগে আন্তর্জাতিক লেনদেন করা সম্ভব?
লক্ষ্য করুন, বর্তমানে আমরা যেই টাকা ব্যবহার করছি তা একটি বস্তুগত দ্রব্য (কাগজ)। আমরা কাগজ ধরতে পারি, দেখতে পারি, কিন্তু এর বিপরীতে তৈরিকৃত ডিজিটাল মুদ্রা আমরা ধরতে বা দেখতে পারি না। তারপরেও ডিজিটাল মুদ্রাতে কাগজের টাকার মতোই আমরা লেনদেন করি। একইভাবে সোনার বিপরীতে আমরা ডিজিটাল সোনার মুদ্রা ইস্যু করতে পারব। সোনা দেখতে বা ছুঁতে পারলেও সোনার বিপরীতে তৈরিকৃত ডিজিটাল মুদ্রা আমরা দেখতে বা ছুঁতে পারবো না।
এক্ষেত্রে একটি নিয়ম অবশ্যই মেনে চলতে হবে। তা হচ্ছে, যতগুলো সোনা সিন্দুকে সংরক্ষিত আছে কেবল তার বিপরীতেই একেবারে সমান সংখ্যক ডিজিটাল মুদ্রা তৈরি করতে হবে। যখন কেউ লেনদেন করবে তখন ডিজিটগুলো এক একাউন্ট থেকে আরেক একাউন্টে ট্রান্সফার হবে এবং যেকেউ চাইলে ডিজিটগুলো ভেঙ্গে সোনা তুলে আনতে পারবে।
কেউ যদি সোনা না রেখে মিথ্যা কিছু ডিজিট লিখে দেয় তখন কি হবে? একটি বিষয় লক্ষ্য করুন, বর্তমানেও টাকা ছাড়া মিথ্যা ডিজিট লিখে দিতে পারি আমরা। কিন্তু বাস্তবে কি সবাই তা করতে পারছে? না, তা পারছে না। তার কারণ এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা আছে এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও তৎপর আছে। বর্তমানে যেভাবে টাকা ছাপানো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে, কিংবা যেমনে ইচ্ছা তেমনে ডিজিট লিখে টাকা বলে চালিয়ে দেওয়া যাচ্ছে না, ঠিক তেমনি করে সোনার মুদ্রাতেও ডিজিটাল লেনদেন করা সম্ভব।
মনে করেন, আপনি আমার থেকে একটি বই অর্ডার করলেন। আপনি স্বর্ণালী ব্যাংক থেকে এক গ্রাম সোনা আমার ব্যাংক একাউন্টে পাঠিয়ে দিলেন। এই লেনদেনে প্রথমে কেবল ডিজিটগুলো বদলাবে। প্রথমত স্বর্ণালী ব্যাংকের ভল্টের সোনার পরিমাণ এক গ্রাম কমবে এবং আমার ব্যাংকের ভল্টে সোনার পরিমাণ এক গ্রাম বাড়বে। এভাবে সারাদিন ব্যাংক গুলোর মাঝে বিভিন্ন রকম লেনদেন হবে। দিন শেষে তাদের নেট হিসেব অনুযায়ী যেই লেনদেন থাকবে তা বর্তমানে যেমন গাড়িতে করে টাকা ট্রান্সফার করা হয় তেমনি করে সোনার বার ট্রান্সফার হবে। এক কথায়, বর্তমানের মতোই সবকিছু থাকবে।